কবিতা, পরবাস-৭৩, ডিসেম্বর, ২০১৮

কবিতা, পরবাস-৭৩, ডিসেম্বর, ২০১৮

সঙ্গ – ১

পাহাড় ছুঁয়ে ডাকো, কাজের মধ্যে ডাকো,
ঘরে, বাইরে
শ্রান্ত সন্ধ্যার হাওয়ায়,
অরণ্যের ফিসফাসের ফাঁকে ফাঁকে।
এত ডাকো। কেন এত ডাকো!

হাতে আঁকড়ানো হাত আরো
আরো
আরো
মুঠো হয়। আর মুঠো জুড়ে
তোমার, আমার, আমাদের ব্যর্থযাপন জুড়ে,
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর সন্ধ্যা নামে
ছায়া ঘনায়, তার বুক ভরে থাকে
লুকিয়ে, খুব আস্তে, ধরে রাখা নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে
সহ্য করে যাওয়া।

ফোন রাখার আগের কয়েক মুহূর্তের নীরবতায়
এই সব গল্প বলা হয়ে যায় রোজ।
তারপর খালি বলে, না বলে, দুহাত বাড়িয়ে ডাকা,
খালি পুড়ে যাওয়া, নিঃশব্দে, নিঃসঙ্গে,
আর…
হাওয়ায় উড়ে যাওয়া কিছু বুভুক্ষু অশ্রুকণা-সুখ…

সঙ্গ – ২

পাহাড় বেয়ে ঝর্ণা নামে
অপ্রস্তুতের হঠাৎ স্নান
আঙুল আরো আঁকড়ে ধরে
জড়ায় প্রাণে প্রাণের টান।

সবুজ পাহাড়, রোদ্দুরে নীল,
আকাশ ঘেঁষে ছোট্ট বাড়ি,
ভরসা কাঁধে মুখ নামানোর,
আপনজনার অহংকার-ই।

জড়িয়ে রাখার মিষ্টি ওম
ঠোঁটের ছোঁয়া চুলের পাশে,
আমার বুকের লাজুক সে গান
তোমার বুকের মধ্যে ভাসে।

সেই গানটার শরীর থেকে
একটা দুটো আখর তুলে
যেই পাঠালে আজ সকালে
দিনযাপনের জানলা খুলে

ভাসিয়ে নিল ঝর্ণা বেভুল
ভ্রান্তিবিলাপ, অসম্মান,
শরীর বেয়ে ঝর্ণা ঝরে
এক জীবনের আদর-স্নান।

(পরবাস-৭৩, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮)

Leave a Comment