শিল্পী

শিল্পী

শিল্পী
——–

জীবন এঁকেছ কখনও?

তিনি আঁকেন। রোজ। মাধবীলতার ফাঁক দিয়ে ছড়িয়ে পড়া স্নিগ্ধ রোদের সঙ্গে দুলে দুলে ছড়া মুখস্থ করার মিশেল দিয়ে, বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে সদ্য চাকরিতে ঢোকা মেয়েটির কানের দুলের টুংটাং এর শেড মিলিয়ে, রাতচরা পাখির ডাকটি ঘুমের মধ্যে যে চমকে দিয়ে যায়, সেই চমকটির উপর এক পরত জ্যোৎস্নার চাদর বিছিয়ে।

তাঁর নিপুণ তুলির টানে কখনও ফুটে ওঠে একঝুড়ি চুনোমাছ নিয়ে বসা বুড়ির ফোকলা হাসি। কখনও দানা খেতে আসা পায়রাদের ঝগড়াঝাঁটি খুনসুটি। আবার কখনও বা কোনও একলা মেয়ে, তার চুল বেয়ে ঝড় নেমে আসে।

সে ঝড়ও আঁকেন তিনি। ঝরা পাতার মত তা ভাসিয়ে নিয়ে যায় যত দুঃখ, শোক, ক্লান্তি।

আবার নতুন ক্যানভাস আসে, রঙ পড়ে।

আজ তুলির টানটা একটু বেলাগাম হল। জলের সঙ্গে জল মিশে নরম ছড়িয়ে পড়ার বদলে কয়েকটা আঁচড় ফুটে উঠল ক্যানভাসে।

নতুন করে রঙ দিয়ে মেরামত করতে গিয়ে একটু থমকে দাঁড়ালেন তিনি। এদিক থেকে দেখলেন, ওদিক থেকে দেখলেন।

আঁচড়গুলো থাকায় ছবিটায় কেমন ছেলেমানুষী আনন্দ ফুটে উঠেছে না?

বেশ লাগছে কিন্তু!

থাক, এমনই থাক আজ তবে।

তিনি জলে তুলি ধুয়ে তুলে রাখলেন।

Recent Comments

Leave a Comment