বাড়ি

বাড়ি

বাড়ি।

হারিয়ে গেলেও, যেখানে ঠিক ফিরে আসতে পারি।

 

এই বাড়িটা আমার দাদু-দিদার তৈরি। সেই সময়ের মতো, ঘুলঘুলি, খড়খড়ি পাল্লার জানলা, লাল সিমেন্টের মেঝে। অসমাপ্ত গড়ন দেখতেই পাচ্ছেন, ওই চৌকো ফাঁক রেখে পিলার করা হয়েছিল জানলা বসবে বলে। সেসব আর হয়নি।

 

চাইলেই করা যেত হয়তো তারপর। কিন্তু আমরা কেউ চাইনি। দাদু-দিদার করা সব কিছু যথাসম্ভব তেমনই রেখে দেওয়া হয়েছে। এই পিলারগুলো আর ওই ছোট্ট ছোট্ট বারান্দা জুড়ে আমার ছোটোবেলার অজস্র খেলাধুলোর স্মৃতি। একটা পিলারে একটা ইট খসে তৈরি হওয়া কুলুঙ্গি ছিল৷ তাতে আমার সব গোপন সম্পত্তি থাকত। জামার বাহারি বোতাম, ছোট্ট মজার গড়নের কোনও বীজ, পুঁতি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিচের রাস্তায় লোকজন গাড়ি সাইকেল দেখা হত বিকেলবেলা। ওই মাধবীলতার ঝাড়ের নিচে বসে কাঠিকুটি দিয়ে রান্নাবাটি খেলা করতে করতে আমার ছুটির দুপুর কাটত। চোদ্দ পিদিমের দিন ওই বারান্দাগুলোয় সারি করে মোমবাতি জ্বালিয়ে দিতুম। ছাতে দিদা শীতকালে বড়ি দিত, গরমে আচার রোদে দিত, দাদু শেষ বয়সে অসুস্থ শরীরে কারও হাত ধরে ধরে পায়চারি করত।

 

বাড়ি মানে বড্ড মায়া।

Leave a Comment